শেষবার কবে কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে এমন একপেশে লড়াই দেখা গিয়েছিল, তা হয়তো রেকর্ড বইতেও খুঁজে পাওয়া কঠিন। শনিবার মাত্র ৫৭ মিনিটের লড়াইয়ে পোল্যান্ডের অষ্টম বাছাই ইগা শিয়নটেক ১৩ নম্বর বাছাই আমেরিকার আমান্ডা আনিসিমোভাকে স্ট্রেট সেটে (৬-০, ৬-০) উড়িয়ে দিলেন। ১১৪ বছর আগে, ১৯১১ সালে উইম্বলডনে মহিলাদের সিঙ্গেলস ফাইনালে ডরোথি ল্যাম্বার্ট চেম্বার্স ৬-০, ৬-০ সেটে ডোরা বুথবিকে হারিয়েছিলেন। সেই দৃশ্যেরই পুনরাবৃত্তি হলো এবার।

পুরো ম্যাচে আনিসিমোভা একটি গেমও জিততে পারেননি, অসহায়ভাবে তাকে হারতে হলো। দর্শকরাও এই ফাইনাল দেখে হতাশ হয়েছেন। সেমিফাইনালে অঘটন না ঘটলে হয়তো শিয়নটেক বনাম সাবালেঙ্কার লড়াই অনেক বেশি উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারতো। তবে শিয়নটেক দারুণ খুশি, কারণ এটি তার প্রথম উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়।
গত কয়েক বছরে মহিলাদের গ্র্যান্ড স্ল্যামের বেশির ভাগ ট্রফিই তিন তারকার মধ্যে ভাগ হয়েছে। শিয়নটেক ছাড়া তালিকায় রয়েছেন কোকো গফ ও এরিনা সাবালেঙ্কা। গফ এ বার প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিয়েছেন। বাকি ছিলেন সাবালেঙ্কা। তাকেও সেমিফাইনালে হারিয়ে চমক দিয়েছিলেন আনিসিমোভা। ফলে শিয়নটেকের সামনে লড়াই সহজ ছিল। ঠান্ডা মাথায় তা জিতে নিলেন তিনি।
২০২৪ সালে ফরাসি ওপেন জেতার পর চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যামে নেমে জিততে পারেননি তিনি। পছন্দের ফরাসি ওপেনও (ছ’টা গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে তাঁর চারটেই লাল সুরকির কোর্টে) এ বার হতাশ করেছে। অবশেষে ঘাসের কোর্টে হাসি ফিরল তার মুখে।
ক্রমতালিকায় ১৩ নম্বরে থাকলেও কেরিয়ারে এই প্রথম বার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠেছিলেন আনিসিমোভা। সেমিফাইনালে যে ভাবে তিনি সাবালেঙ্কার পাওয়ার টেনিস সামলে জিতেছিলেন, তা নজর কেড়েছিল।
ফাইনালেও তিনি অঘটন ঘটাতে পারেন কি না, সে দিকে নজর ছিল টেনিসপ্রেমীদের। পারলেন না আনিসিমোভা। হয়তো প্রথম বার ফাইনালের চাপ সামলাতে পারলেন না তিনি। নইলে সেমিফাইনালে যে খেলাটা খেলেছিলেন, তার ১০ শতাংশও এ দিন খেলতে পারেননি তিনি। তার খেসারত দিতে হল। ‘ডবল ব্যাগেল’-এ (টেনিসে ০-৬ হারলে তাকে বলা হয় সিঙ্গল ব্যাগেল। এ ক্ষেত্রে দুটো সেটে ০-৬ হওয়ায় ডবল ব্যাগেল) শিয়নটেকের কাছে হারলেন তিনি।
আনিসিমোভা (২৩) ও শিয়নটেকের (২৪) বয়সের ব্যবধান বেশি নয়। কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতার বিশাল পার্থক্য। কেরিয়ারে এর মধ্যেই ছ’টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলেছেন শিয়নটেক। ফাইনালে তাঁর রেকর্ড ১০০ শতাংশ। এক বারও রানার আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়নি। সেই অভিজ্ঞতায় চাপে পড়লেন আনিসিমোভা।