ধনকুবেরদের বিলাসী অ্যাডভেঞ্চার মহাকাশ পর্যটন  

মহাকাশ। মানবজাতির চিরন্তন মুগ্ধতার কেন্দ্রবিন্দু। একসময় যা ছিল কেবলই কল্পবিজ্ঞানের উপজীব্য, তা-ই আজ পরিণত হয়েছে বিলিয়ন ডলারের এক সম্ভাবনাময় শিল্পে। প্রশ্নটা এখন আর ‘কবে হবে’ নয়, বরং ‘কারা হবে’— অর্থাৎ সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ যাত্রা কতটা সুগম হলো? মহাকাশ পর্যটন এখনও কি নিছকই স্বপ্ন, নাকি বাস্তবতা?
 
 
কোম্পানিপ্রতিষ্ঠাতাপ্রধান সাফল্য/ফোকাস
SpaceXএলন মাস্ককক্ষপথীয় পর্যটন (Orbital Tourism), ‘ইনস্পিরেশন ৪’ (Inspiration4) সফল মিশন।
Blue Originজেফ বেজোসসাব-অর্বিটাল ফ্লাইট, নিজস্ব রকেট ‘নিউ শেপার্ড’ (New Shepard)।
Virgin Galacticরিচার্ড ব্র্যানসনসাব-অর্বিটাল ফ্লাইট, রকেটচালিত প্লেন ‘স্পেসশিপ টু’ (SpaceShipTwo)।
বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাহসী বিনিয়োগ এবং কয়েকটি সফল মিশনের পর এই আলোচনা এখন তুঙ্গে। মহাকাশের সীমানা পেরোনো এখন আর শুধু প্রশিক্ষিত নভোচারীদের একচেটিয়া অধিকার নয়, বরং উচ্চবিত্তদের জন্য এক রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চার।

মহাকাশ পর্যটন কী? মহাকাশ পর্যটন হলো সাধারণ মানুষ বা অ-পেশাদারদের জন্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল পেরিয়ে মহাকাশে ভ্রমণ। সহজ কথায়, মহাকাশের অভিজ্ঞতা লাভ করার জন্য অর্থ প্রদান করে যে ভ্রমণ করা হয়, সেটাই মহাকাশ পর্যটন। এটি পৃথিবীর কক্ষপথে স্বল্প সময়ের জন্য প্রদক্ষিণ হতে পারে, আবার বায়ুমণ্ডলের প্রান্তে গিয়ে ফিরে আসা মাত্র কয়েক মিনিটের এক অভিজ্ঞতাও হতে পারে।

মহাকাশ পর্যটন একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এটি মানুষকে কেবল যাত্রী হিসেবে নয়, বরং মহাকাশ অনুসন্ধানের একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুক্ত করছে।

মহাকাশ পর্যটন বহুদিন মানুষের স্বপ্ন বা কল্পনা হিসেবেই ছিল। তবে এখন আর বিষয়টি সেরকম নয়। কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানির যুগান্তকারী সাফল্যর পর বিষয়টি এখন অন্য মাত্রা পেয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো মহাকাশ নিয়ে নাসার একচেটিয়া আধিপত্য ভেঙে দিয়েছে।

২০২১ সালে ভার্জিন গ্যালাকটিকের রিচার্ড ব্র্যানসন এবং ব্লু অরিজিনের জেফ বেজোস কয়েক দিনের ব্যবধানে নিজেরা মহাকাশের প্রান্তে গিয়ে ফিরে আসার মাধ্যমে এই খাতকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। স্পেসএক্স-এর ‘ইনস্পিরেশন ৪’ মিশনের চার সাধারণ মানুষের কক্ষপথ প্রদক্ষিণ এই খাতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। এই মিশনগুলো প্রমাণ করেছে যে, বাণিজ্যিক মহাকাশ ভ্রমণ শুধু সম্ভবই নয়, বরং তুলনামূলকভাবে নিরাপদও।

মহাকাশ পর্যটনের ইতিহাস ও বিবর্তন

মহাকাশ পর্যটনের ধারণা নতুন নয়। তবে বাণিজ্যিকীকরণের শুরুটা হয় ২১ শতকের গোড়ার দিকে। মহাকাশের প্রথম অর্থ-প্রদানকারী পর্যটক ছিলেন মার্কিন ব্যবসায়ী ড্যানিস টিটো। ২০০১ সালে তিনি রাশিয়ার ফেডারেল স্পেস এজেন্সির (রসকসমস) মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি ডলার (বর্তমানে প্রায় ২২০ কোটি টাকা) খরচ করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ভ্রমণ করেন
২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মোট সাতজন পর্যটক মহাকাশ স্টেশনে ভ্রমণ করেন, যার মধ্যে দু’জন দু’বার করে গেছেন। এই ভ্রমণগুলো ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং কেবল রাশিয়ার সয়ুজ রকেটের মাধ্যমে সম্ভব ছিল।

ব্যক্তিগত কোম্পানির উত্থান: ২০১০ সালের পর থেকে এই খাতে বড় পরিবর্তন আসে। এলন মাস্ক, জেফ বেজোস, এবং রিচার্ড ব্র্যানসনের মতো বিলিয়নিয়ারদের আগমন বেসরকারি খাতকে নেতৃত্ব দিতে শুরু করে, যার ফলে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং খরচের প্রতিযোগিতামূলক মডেল তৈরি হয়।

মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ও গন্তব্যের ভিত্তিতে পর্যটনের প্রধানত দুটি ধরন প্রচলিত। এর একটি হলো সাব-অর্বিটাল বা  উপ-কক্ষপথীয় ভ্রমণ। এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের একদম প্রান্তে ভ্রমণ, যা পৃথিবীর সঙ্গে একটি অর্ধ-বৃত্তাকার পথে ফিরে আসে। এই ধরনের ভ্রমণে পর্যটকরা মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য ভারহীনতার (Weightlessness) অভিজ্ঞতা পান এবং পৃথিবীর বক্রতা দেখতে পান। এই ভ্রমণের সীমা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার (কারম্যান লাইন)। এর সময়কাল সাধারণত ৯০ মিনিটের কম হয়। ব্লু অরিজিন, ভার্জিন গ্যালাকটিকের মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ভ্রমণ সম্ভব।

মহাকাশ পর্যটনের আরেকটি ধরন হলো অর্বিটাল বা কক্ষপথীয় ভ্রমণ। এই ভ্রমণে মহাকাশযানটি পৃথিবীর চারপাশে একটি পূর্ণ কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের বাইরে থেকে প্রদক্ষিণ করে। এই যাত্রায় বেশ কয়েক দিন বা সপ্তাহ ধরে ভারহীনতার অভিজ্ঞতা এবং পৃথিবীর সম্পূর্ণ দৃশ্য দেখা যায়। কেউ কেউ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা নতুন কোনো ব্যক্তিগত স্পেস স্টেশনে যেতে পারে। এই ভ্রমণ কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। স্পেসএক্স, অ্যাক্সিওম স্পেস এই ধরনের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দিতে সক্ষম।

মহাকাশ ভ্রমণ কি নিরাপদ? খরচ কত?  
মহাকাশ পর্যটনের জন্য বিশেষভাবে নকশা করা রকেট ও মহাকাশযান ব্যবহার করা হয়। নিরাপত্তার বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভার্জিন গ্যালাকটিক তাদের রকেট প্লেন ‘স্পেসশিপ টু’-এর জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করে। অন্যদিকে, ব্লু অরিজিনের ‘নিউ শেপার্ড’ রকেটে যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ ক্যাটাপল্ট সিস্টেম রয়েছে। স্পেসএক্সের ‘ক্রু ড্রাগন’ ক্যাপসুলটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালনার জন্য তৈরি, যা মানুষের ভুলের সম্ভাবনা কমায়।
মহাকাশ পর্যটন আক্ষরিক অর্থেই যেমন আকাশছোঁয়া, এর খরচও আকাশছোঁয়া। তবে বাণিজ্যিক মডেলগুলো প্রতিযোগিতার ফলে ধীরে ধীরে এর দাম কমতে পারে।

সাব-অর্বিটাল ভ্রমণে প্রতি টিকিটের দাম ৪, ৫০,০০০ ডলার (প্রায় ৫ কোটি টাকা) থেকে শুরু (ভার্জিন গ্যালাকটিক)। ব্লু অরিজিন তাদের প্রথম দিকের আসনগুলো নিলামে বিক্রি করেছে।  আর অর্বিটাল ভ্রমণের খরচ আরও বেশি। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ব্লু অরিজিন তাদের টিকিটের মূল্য গোপন রাখে। তবে এই ভ্রমণে  প্রতি সিটের খরচ ৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা) পর্যন্ত হতে পারে, বিশেষ করে আই.এস.এস.-এ যাওয়ার জন্য।

ব্যয় কমাতে রকেটের পুনঃব্যবহারযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ। স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন ৯ এবং ব্লু অরিজিনের নিউ শেপার্ড এই প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ করেছে, যা এই খাতকে আরও সুলভ করার মূল চাবিকাঠি।

মহাকাশ ভ্রমণের চাহিদা পূরণের জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন হবে, যা অন্যান্য শিল্পেও কাজে লাগবে। এটি একটি নতুন শিল্প তৈরি করবে, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নতুন বিনিয়োগ আনবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে মহাকাশ বিজ্ঞান ও অনুসন্ধানের প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়লে মহাকাশ গবেষণা ও উন্নয়নের খরচ কমবে।

মহাকাশ পর্যটন ঘিরে কিছু গুরুতর সমালোচনা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন এর পরিবেশগত প্রভাব। রকেটের উৎক্ষেপণ থেকে নির্গত কার্বন এবং অন্যান্য রাসায়নিক বায়ুমণ্ডল ও জলবায়ুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি এক ধরনের ‘কার্বন এলিট’-এর বিলাসিতা হিসেবে সমালোচিত হচ্ছে।

মহাকাশ ভ্রমণ বাড়লে মহাকাশে পরিত্যক্ত বর্জ্যের (Space Debris) সংখ্যা বাড়বে, যা ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনগুলোর জন্য বড় হুমকি। এখনও এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ খাত। সামান্য ত্রুটিও বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

আন্তর্জাতিকভাবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও আইনি কাঠামোর অভাব রয়েছে, যা এই নতুন শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অপরিহার্য।

বর্তমানে মহাকাশ পর্যটন আন্তর্জাতিক মহাকাশ আইনের অধীনে পড়ে, যা মূলত ১৯৬৭ সালের বহিরাকাশ চুক্তি (Outer Space Treaty of 1967) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, কোনো রাষ্ট্র মহাকাশে কোনো প্রকার জাতীয় দাবি করতে পারবে না।

তবে মহাকাশ পর্যটনকে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন আইনের প্রয়োজন। এর মধ্যে যাত্রীদের নিরাপত্তা, পরিবেশগত প্রভাব এবং মহাকাশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। অনেক দেশেই এখন মহাকাশ পর্যটকদের জন্য আলাদা করে ‘মহাকাশ যাত্রী’ এবং পেশাদার নভোচারীর মধ্যে পার্থক্য করা হচ্ছে।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা : স্বপ্ন এখন বাস্তবতা?
মহাকাশ পর্যটন এখন আর স্বপ্ন নয়; এটি একটি উদীয়মান বাস্তবতা। যদিও এর সুবিধা এখন পর্যন্ত উচ্চবিত্তদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, কিন্তু ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাগুলো এই খাতকে আরও বেশি মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার ইঙ্গিত দেয়।

মহাকাশ পর্যটন

ধনকুবেরদের বিলাসী অ্যাডভেঞ্চার থেকে শুরু করে ভবিষ্যতের সাধারণ মানুষের স্বপ্ন—মহাকাশ পর্যটনের খুঁটিনাটি জানুন।

ভ্রমণের ধরন বেছে নিন

সাব-অর্বিটাল

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রান্তে গিয়ে ফিরে আসা।

উচ্চতা১০০ কিমি
সময়কাল৯০ মিনিটের কম
খরচ৪.৫ কোটি টাকা+

অর্বিটাল

পৃথিবীর চারপাশে পূর্ণ কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করা।

উচ্চতা৪০০+ কিমি
সময়কালকয়েক দিন/সপ্তাহ
খরচ৫৫০ কোটি টাকা+

প্রধান খেলোয়াড় ও মহাকাশযান

স্পেসএক্স (SpaceX)

প্রতিষ্ঠাতা: এলন মাস্ক

যান: ক্রু ড্রাগন। ইনস্পিরেশন ৪ মিশনের মাধ্যমে তারা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।

ব্লু অরিজিন (Blue Origin)

প্রতিষ্ঠাতা: জেফ বেজোস

যান: নিউ শেপার্ড। উল্লম্ব টেক-অফ এবং ল্যান্ডিং রকেট।

ভার্জিন গ্যালাকটিক

প্রতিষ্ঠাতা: রিচার্ড ব্র্যানসন

যান: স্পেসশিপ টু। এটি রানওয়ে থেকে উড্ডয়ন করে।

চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা

পরিবেশগত প্রভাব

রকেট উৎক্ষেপণে কার্বন নির্গমন হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্ষতিকর।

মহাকাশ বর্জ্য

কক্ষপথে পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশ ভবিষ্যৎ মিশনের জন্য বড় হুমকি।

আইনি কাঠামো ও নিরাপত্তা

  • আন্তর্জাতিক আইনের অভাব।
  • ‘আউটার স্পেস ট্রিটি’ বাণিজ্যিক পর্যটন কভার করে না।
  • রকেট উড্ডয়ন এখনও ঝুঁকিপূর্ণ।
প্রশ্ন ১/৪ স্কোর: 0

প্রশ্ন লোড হচ্ছে…

কুইজ সমাপ্ত!

আপনার স্কোর

0 / 4

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা: ২০৩০ সালের মধ্যে এই বাজার ৯০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

 
আগামী এক দশকের মধ্যে সাব-অর্বিটাল ফ্লাইটগুলো বিমানের মতো নিয়মিত হয়ে উঠতে পারে। আই.এস.এস.-এর মতো কক্ষপথীয় স্থাপনাগুলো ব্যক্তিগত কোম্পানির হাতে চলে যেতে পারে এবং স্পেস হোটেল তৈরির মাধ্যমে নতুন এক আতিথেয়তা শিল্পের জন্ম দিতে পারে।
মহাকাশ পর্যটনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো চাঁদ এবং মঙ্গল গ্রহের মতো দূরের গন্তব্যে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা, যা স্পেসএক্স-এর স্টারশিপ কর্মসূচির মূল ফোকাস।

বিশ্লেষকদের মতে, এই খাতের আকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৯০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, এর মধ্যে শুধু মহাকাশ পর্যটনের বাজার হতে পারে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা গেলে এবং প্রযুক্তির খরচ আরও কমানো সম্ভব হলে, একসময় সাধারণ মানুষও হয়তো মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন দেখতে পারবে। তবে ততদিন পর্যন্ত, এই খাতটি ধনকুবেরদের বিলাসী অ্যাডভেঞ্চার হিসেবেই পরিচিত থাকবে।