মানুষের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণীদের যদি তালিকা তৈরি করা হয় তবে সে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে মানুষ নিজেই। কী সাংঘাতিক প্রাণী মানুষ।
বাকিগুলোর কথা বলছি, তবে চলুন ১০ নম্বরে থাকা সিংহ দিয়ে শুরু করা যাক-
সিংহের গর্জন যারা নিজের কানে শুনেছেন, শুধু তারাই জানেন এই গর্জন কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। সিংহের কারণে খুব বেশি মানুষকে প্রাণ দিতে হয় না। বিবিসি সাইন্স ফোকাস ম্যাগাজিন বলছে সিংহের কারণে বছরে ২০০ জন মানুষ প্রাণ হারায় যাদের বেশিরভাগই আফ্রিকা মহাদেশের। কারণ সিংহের বসবাস সেখানেই সবচেয়ে বেশি।
তালিকার ৯ নম্বরে থাকা প্রাণীটি জলহস্তী। তৃণভোজী এ প্রাণীটির নাম তালিকায় দেখে অনেকেই হয়তো অবাক হবেন। কারণ, এ ধরনের প্রাণীরা সাধারণত নিরীহ ও শান্ত স্বভাবের হয়ে থাকে। কিন্তু জলহস্তির ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। গবেষকরা বলছেন এদের আক্রমণে আফ্রিকায় বছরে ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ধারালো দাঁত দিয়ে এরা সিংহের চেয়ে তিনগুণ বেশি গতিতে কামড় বসাতে পারে; যা একজন মানুষের শরীরকে দুখণ্ড করার জন্য যথেষ্ট।
তালিকার ৮ নম্বর রয়েছে স্থলভাগের সবচেয়ে বড় এবং ওজনদার প্রাণী হাতি। পূর্ণবয়স্ক একটি হাতির ওজন পাঁচ থেকে আট টন পর্যন্ত হয়ে থাকে; যা একজন মানুষকে পায়ের নিচে ফেলে পিষে মারার জন্য যথেষ্ট। হাতির আক্রমণে বছরে গড়ে প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়।
হাতির মতো বিশালাকার না হলেও মানুষ হত্যার দিকে এগিয়ে রয়েছে জলভাগের অন্যতম হিংস্র প্রাণী কুমির। এদের আক্রমণে বছরে গড়ে এক হাজার মানুষ মারা যায়। এ ছাড়া আরো কয়েকশো মানুষ কুমিরের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়, এমনকি পঙ্গুত্ব বরণ করে থাকে।
পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন বিষাক্ত প্রাণী বৃশ্চিকের কারণে বছরে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। বৃশ্চিক বা বিচ্ছুর অবস্থান এ তালিকার ছয় নম্বরে। ছোট তবে ভয়ঙ্কর। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মরুভূমি অঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়। বৃশ্চিকের সাধারণত লেজের অংশে বিষ থাকে, আক্রমণের সময় এরা লেজ দিয়ে হুল ফোটায় এবং শিকারের শরীরে বিষ ঢেলে দেয়।
তালিকায় ৫ নম্বরে থাকা প্রাণীটির নাম হয়তো অনেকেই শোনেননি। এর নাম হলো অ্যাসাসিন বাগ। দেখতে অনেকটা মশা মাছির মতো এই প্রাণীটিকে অনেকে কিসিং বাগও বলে থাকেন। তবে কেন বলা হয় তার কোন কারণ জানা নেই। রক্তচোষা এ প্রাণীটি এমন একটি রোগের জীবাণু ছড়ায় যাতে আক্রান্ত হয়ে বছরের দশ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
এর চেয়েও ভয়ঙ্কর প্রাণী হলো কুকুর। একে মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী বলে মনে করা হলেও এর কামড়ে প্রতি বছর বিশ্বে গড়ে প্রায় ৫৯ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে কুকুরের মাধ্যমে মানুষের শরীরে মূলত জলাতঙ্কের ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। তবে কামড়ানো ছাড়াও আক্রান্ত কুকুরের শরীরের জখমের স্থান, লালা এবং নখের আচড় থেকেও জলাতঙ্কের ভাইরাস ছড়াতে পারে।
কবে বাজারে আসলো আইফোন? শুরুতে ব্যবসা কেমন ছিল? এর দামই বা এত বেশি কেন
যেসব লক্ষণে বুঝবেন শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে
এসি ও এয়ার কুলারের মধ্যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কোনটা?
তালিকার তিন নম্বরে থাকা সাপকে তো আমরা সবাই চিনি। অনেকে এতদিন হয়তো ভেবে এসেছেন সাপের কারণেই হয়তো পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে। সাপের কামড়ে বছরে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে। এছাড়াও বহু মানুষ শারীরিক ও মানসিক নানা ক্ষতির মুখে পড়েন।
দুই নম্বরে থাকা মানুষ যদিও অন্যান্য প্রাণীর মতো কামড়ায় না তবুও বিবিসির সাইন্স ফোকাস বলছে মানুষের হাতে প্রতিবছর প্রায় ৪ লাখ মানুষ খুন হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে শুধুমাত্র ২০১৯ সালে ৪ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আর আত্মহত্যা বা গাড়ি দুর্ঘটনার সংখ্যা বিবেচনায় নিলে মানুষের হাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বছরে ১২ লাখেরও বেশি।
তালিকার এক নম্বরে থাকা মানুষের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী হল মশা।বিশ্বে প্রতি বছর ৭ লাখ ২৫ হাজার মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন মশার কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে।