অপ্রতিরোধ্য নারী ফুটবল: ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সেরা ৫ খেলার একটি!

নারীর ফুটবল এখন আর শুধু মাঠের খেলা নয়, এটি এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। পেপসিকোর সহযোগিতায় নিলসেন মিডিয়া রিসার্চ স্পোর্টসের এক নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে নারী ফুটবল বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি খেলার মধ্যে নিজেদের জায়গা করে নেবে। বিশ্বব্যাপী ভক্ত সংখ্যা প্রায় ৩৮% বেড়ে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘আন্ডারভ্যালুড টু আনস্টপেবল’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি নারী ফুটবলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের এক সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে। এতে বলা হয়েছে, এই বিপুল সংখ্যক ভক্তদের প্রায় ৬০% নারী। ফুটবল এমন বিরল খেলাগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে পুরুষদের তুলনায় নারী অনুরাগী বেশি। এটি নারী ফুটবলের প্রতি নারীদের গভীর আগ্রহের এক অসাধারণ প্রমাণ।

শুধু ভক্ত সংখ্যা নয়, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সম্প্রচার দর্শকদের সংখ্যাও প্রধান টুর্নামেন্টগুলিতে ৩০% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা নারী ফুটবলের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের তুলনায় ২০২৩ সালের মহিলা বিশ্বকাপের জন্য স্পনসরশিপ চুক্তি তিনগুণ বৃদ্ধি পেলেও, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে বিশ্বব্যাপী স্পনসরশিপ বাজেটের খুব সামান্য অংশই এখনো নারী ফুটবলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। গবেষকরা মনে করেন, ২০২৮ সালের মধ্যে গৃহস্থালিতে ৭৫% এরও বেশি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নারীদের হাতে থাকবে, যা স্পনসরদের জন্য নারী ফুটবলকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

নিলসেন স্পোর্টস ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামান্থা ল্যাম্বার্টি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে নারী ফুটবলের সম্ভাবনায় বিশ্বাসী। আজ আমরা আর কেবল অগ্রগতি অনুসরণ করছি না, আমরা একটি অগ্রগতির সাক্ষী হচ্ছি। মিডিয়া অধিকার থেকে শুরু করে স্পনসরশিপ এবং ভক্তদের সম্পৃক্ততা, এটি আর ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির বিষয় নয় বরং বর্তমান মূল্যের বিষয়।”

নারী ফুটবল ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ১০টি সর্বাধিক অনুসরণ করা খেলার মধ্যে একটিতে জায়গা করে নিয়েছে এবং এর জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল নারী সকার লিগ চ্যাম্পিয়নশিপে আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ সমর্থক বেড়েছিল। নিলসেনের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে নারী ফুটবলে নারী সমর্থকের সংখ্যা ৬০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রবণতা চীনে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। একই সময়ে ব্রাজিল এবং ভারতে ১৮৬ মিলিয়ন নতুন ভক্তের সংখ্যা বেড়েছে, যা নারী ফুটবলের বিশ্বব্যাপী উত্থানের এক দারুণ দৃষ্টান্ত।

নারী ফুটবল তার অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে, যা কেবল খেলাধুলার জগতেই নয়, সামাজিক প্রেক্ষাপটেও এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনছে।