বর্তমানে স্মার্টফোন কেনার সময় ডিসপ্লে প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। ডিসপ্লের মান শুধু ছবির উজ্জ্বলতা নয়, বরং ব্যাটারি ব্যাকআপ, চোখের আরাম, রঙের গভীরতা ও ফোনের দামেও প্রভাব ফেলে। বাজারে সবচেয়ে প্রচলিত ডিসপ্লে প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে আইপিএস, এলসিডি, অ্যামোলিড, সুপার অ্যামোলিড এবং পিওলিড । চলুন জেনে নিই কোনটি কেমন এবং কার জন্য উপযুক্ত।

১. IPS LCD (In-Plane Switching Liquid Crystal Display)
রঙ ও ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল ভালো।
সস্তা এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত।
স্ক্রিন বার্ন-ইনের ঝুঁকি কম।
অসুবিধা:
কালো রঙ পুরোপুরি কালো হয় না (ব্যাকলাইট থাকার কারণে)।
ব্যাটারি একটু বেশি খরচ হয়।
উজ্জ্বলতা ও কনট্রাস্ট AMOLED-এর চেয়ে কম।
কাদের জন্য ভালো:
বাজেট স্মার্টফোন ব্যবহারকারী যারা ভালো ডিসপ্লে চান কিন্তু কম দামে।
২. AMOLED (Active Matrix Organic Light Emitting Diode)
সুবিধা:
একদম গভীর কালো রঙ (pixels বন্ধ হয়ে যায়)।
প্রাণবন্ত রঙ, বেশি কনট্রাস্ট।
ব্যাটারি সাশ্রয়ী (কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে বিশেষভাবে)।
অসুবিধা:
স্ক্রিন বার্ন-ইনের সম্ভাবনা (দীর্ঘদিন একই ছবি থাকলে)।
IPS এর তুলনায় কিছু ক্ষেত্রে সানলাইট ভিজিবিলিটি কম হতে পারে।
কাদের জন্য ভালো:
মিডরেঞ্জ থেকে ফ্ল্যাগশিপ ফোন ব্যবহারকারী যারা কালার ও মিডিয়া কনসাম্পশন বেশি করেন।
৩. Super AMOLED
এটি মূলত Samsung-এর উন্নত AMOLED সংস্করণ।
সুবিধা:
AMOLED এর সব সুবিধা বজায় রেখে আরও বেশি উজ্জ্বল ও সাশ্রয়ী।
ডিসপ্লের সঙ্গে টাচ সেন্সর একীভূত (কম মোটা, বেশি প্রতিক্রিয়াশীল)।
রিফ্রেশ রেট ও রেসপন্স টাইম দ্রুত।
অসুবিধা:
দাম বেশি।
বার্ন-ইনের সমস্যা এখানেও থাকতে পারে।
কাদের জন্য ভালো:
গেমার, ভিডিও স্ট্রিমার এবং Samsung-এর প্রিমিয়াম ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য আদর্শ।
৪. POLED (Plastic OLED)
LG ও কিছু অন্যান্য ব্র্যান্ড এটি ব্যবহার করে। OLED হলেও স্ক্রিনটি প্লাস্টিক সাবস্ট্রেটে তৈরি।
সুবিধা:
নমনীয়, বাঁকানো স্ক্রিনে ব্যবহার উপযোগী।
পাতলা ও হালকা ডিজাইন সম্ভব।
অসুবিধা:
বার্ন-ইন সমস্যা একটু বেশি।
AMOLED-এর মতোই কিছু রঙে ওভারস্যাচুরেশন থাকতে পারে।
কাদের জন্য ভালো:
নতুন ডিজাইনের ফোন (foldable, curved display) যাদের কাছে আকর্ষণীয়।
বাজেট ও মিডরেঞ্জ ফোনে ভালো IPS LCD এখনো কার্যকর। মিডিয়া দেখা, গেম খেলা ও স্টাইলিশ ডিসপ্লে চাইলে AMOLED বা Super AMOLED ভালো।
ফ্লেক্সিবল ফোন বা নতুন প্রযুক্তি চাইলে POLED উপযোগী।
আপনার ব্যবহারের ধরন ও বাজেট অনুযায়ী ডিসপ্লে নির্বাচন করাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত।