ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৫: জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে সৌরজগতের বাইরে ৪৪টি নতুন পৃথিবীসদৃশ গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। এই আবিষ্কার মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল, যারা কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের আর্কাইভের ডেটা বিশ্লেষণ করছিলেন, তারা এই কাজে একটি অত্যাধুনিক এআই অ্যালগরিদম ব্যবহার করেন। কেপলার টেলিস্কোপ এর আগে হাজার হাজার এক্সোপ্ল্যানেটের (সৌরজগতের বাইরের গ্রহ) সন্ধান দিলেও, এই নতুন ৪৪টি গ্রহ তাদের আকার এবং নক্ষত্র থেকে দূরত্বের বিচারে পৃথিবীর মতোই বলে মনে করা হচ্ছে। এর অর্থ হল, এই গ্রহগুলোতে তরল জল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা প্রাণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষক দলের প্রধান ডক্টর অমিতাভ রায় বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে কেপলারের ডেটা নিয়ে কাজ করছিলাম, কিন্তু এআই ব্যবহারের ফলে আমরা এমন কিছু সংকেতও চিহ্নিত করতে পেরেছি যা আগে মানুষের চোখে এড়িয়ে গিয়েছিল। এই ৪৪টি গ্রহ সত্যিই খুব আগ্রহদ্দীপক, কারণ এদের মধ্যে কয়েকটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”
এই নতুন আবিষ্কৃত গ্রহগুলো বিভিন্ন নক্ষত্রের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে এবং এদের আকার পৃথিবীর কাছাকাছি। বিজ্ঞানীরা এদের বায়ুমণ্ডল এবং রাসায়নিক গঠন সম্পর্কে আরও জানার জন্য আরও শক্তিশালী টেলিস্কোপ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই আবিষ্কার জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। সৌরজগতের বাইরে এতগুলো পৃথিবীসদৃশ গ্রহের সন্ধান পাওয়া মহাবিশ্বে প্রাণের প্রাচুর্য থাকার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। ভবিষ্যতে আরও উন্নত এআই এবং টেলিস্কোপ ব্যবহারের মাধ্যমে হয়তো আমরা অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের সন্ধান পেতে সক্ষম হব।
এই গবেষণাটি সম্প্রতি “অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল” নামক বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।