বর্তমান সময়ে ফ্যাটি লিভার অত্যন্ত একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যারা গলব্লাডার (পিত্তথলি) অপসারণের পরবর্তী সময়ে রয়েছেন, তাদের জন্য এই সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। তবে সঠিক খাবারের মাধ্যমে লিভারের বিষক্রিয়া অপসারণ ও চর্বি জমা রোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন গলব্লাডার ও ফ্যাটি লিভার বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ অলিভিয়া হাস।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে ভারতীয় পুষ্টিবিদ অলিভিয়া হাস ফ্যাটি লিভারের সমস্যা কাটিয়ে সুস্থ থাকার বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে তিনি ৭টি খাবার খেতে বলেছেন। চলুন জেনে নিই, ফ্যাটি লিভার হলে কোন ৭টি খাবার খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত:
ব্রকোলি স্প্রাউট: ব্রকোলি স্প্রাউটে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহরোধী উপাদান। এতে থাকা সালফোরাফেন লিভারের দ্বিতীয় ধাপের বিষক্রিয়া অপসারণ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।
লিন প্রোটিন: চর্বি কম থাকা প্রাণিজ প্রোটিন যেমন মুরগি বা মাছ, অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে, যা লিভারের ডিটক্স এনজাইম সক্রিয় করতে সাহায্য করে এবং ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কার্যকর।
সার্ডিন মাছ: সার্ডিনে রয়েছে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন বি১২। এটি লিভারের ফ্যাট কমাতে, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে এবং মেটাবলিজম উন্নত করতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটি টরিন সমৃদ্ধ, যা পিত্তের কার্যকারিতা বাড়ায়।
তেতো জাতীয় খাবার: তেতো খাবার যেমন করলা, মুলোর পাতা বা তেজপাতা বাইল উৎপাদন ও প্রবাহে সহায়তা করে। এটি চর্বি হজমে সাহায্য করে এবং লিভার পরিষ্কার রাখে।
কোলিন: কোলিন এমন একটি পুষ্টি উপাদান, যা লিভারের চর্বি এবং কোলেস্টেরল বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। এটি বাইলের প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে এবং লিভারে চর্বি জমা কমায়।
ক্রুসিফেরাস সবজি: বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলির মতো সবজি লিভারের উভয় ধাপের ডিটক্স প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
দ্রবণীয় আঁশ: এই আঁশ শরীরের অতিরিক্ত হরমোন, টক্সিন ও বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে তা সহজে নিষ্কাশনে সাহায্য করে। এটি লিভারের ওপর চাপ কমায় এবং পিত্ত অ্যাসিড-সম্পর্কিত সমস্যায় উপকারী।
ফ্যাটি লিভার ও গলব্লাডার সমস্যার ক্ষেত্রে সঠিক খাদ্য নির্বাচন শুধু উপসর্গ নিয়ন্ত্রণেই নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে লিভারের সুস্থতা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পুষ্টিবিদ অলিভিয়া হাস যেসব খাবারের কথা উল্লেখ করেছেন, সেগুলো লিভারকে বিষক্রিয়া থেকে মুক্ত রাখতে, চর্বি জমা প্রতিরোধে এবং সামগ্রিক হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক। তাই জীবনধারায় ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে যেমন সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা যায়, তেমনি ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে যেকোনো শারীরিক জটিলতার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাই ভালো।