রাহার জন্য প্রতিদিন লেখা হয় ভালোবাসার গল্প

অভিনেত্রী আলিয়া ভাট, যিনি ক্যামেরার সামনে নানান চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরেন, বাস্তব জীবনে তার সেরা চরিত্রটি হলো ‘মা’। মেয়ে রাহা আসার পর থেকেই আলিয়ার জীবনে এসেছে এক বিশাল পরিবর্তন, আর এই পরিবর্তনকে তিনি ধরে রাখছেন এক অভিনব উপায়ে। রাহার জন্মের পর থেকেই আলিয়া প্রতি মাসে তাকে একটি করে ই-মেইল পাঠিয়ে আসছেন।

এই ই-মেইলগুলোতে লেখা থাকে রাহার বেড়ে ওঠার ছোট্ট ছোট্ট মুহূর্তগুলো – যেমন, “আজ রাহা প্রথম এক পা হেঁটেছে,” “আজ সে দাদির কোলে ঘুমিয়ে পড়েছিল,” অথবা “আজ সে বাবার গালে এক ছোট্ট চুমু খেয়েছে।” প্রতিটি ই-মেইলের সঙ্গে থাকে অসংখ্য ছবি, যা রাহার জীবনের এই অমূল্য মুহূর্তগুলোকে জীবন্ত করে তোলে – কখনও বাবার সঙ্গে খেলায় মত্ত, কখনও মায়ের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমানো। আলিয়া এই ডিজিটাল স্মৃতিগুলোকে সযত্নে সাজিয়ে রাখছেন।

আলিয়ার ইচ্ছা, রাহা যখন ১৫ বছর বয়সী হবে, তখন তিনি তাকে এই মেইলবক্সটি দেবেন এবং বলবেন, “এই দেখো, এগুলো তোমার ছোটবেলার গল্প। এইভাবে আমরা তোমায় ভালোবেসে বড় করেছি।” এই উদ্যোগ শুধু রাহার জীবনের মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখা নয়, এটি আলিয়ার পরিবর্তিত মাতৃত্বের এক প্রতিচ্ছবি। আলিয়া জানান, রাহা আসার পর তিনি অনেক বেশি ধৈর্যশীল হয়েছেন এবং জীবনকে নতুন করে চিনতে শিখেছেন।

তবে আলিয়ার এই মাতৃত্বের যাত্রা শুরু থেকেই খোলামেলা ছিল না। রণবীর এবং আলিয়া প্রথমদিকে তাদের মেয়েকে ক্যামেরা ও ফ্ল্যাশ থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাহার কোনো ছবি প্রকাশ করেননি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তাদের সিদ্ধান্ত বদলে যায়। একদিন আলিয়া নিজেই ছোট্ট রাহাকে পাপারাজ্জিদের সামনে নিয়ে আসেন। সেদিন সবাই অবাক হয়েছিলেন, কারণ একরত্তি রাহা ক্যামেরা দেখে ভয় না পেয়ে সাবলীলভাবে পোজ দিয়েছিল, যেন এই দুনিয়ার আলো ও ক্যামেরার ঝলক সামলানোর জন্য সে পুরোপুরি প্রস্তুত।

আলিয়া ভাট তার মেয়ের জন্য প্রতিটি দিন লিখে রাখছেন একেকটি দৃশ্য, একেকটি ‘লাইভ মেমোরি’, যেন একদিন সেই ছোট্ট মেয়েটি যখন তার জীবনের গল্প জানবে, সে যেন বুঝতে পারে ভালোবাসা কেমন করে জমা হয় প্রতিদিনের ছোট্ট ছোট্ট মুহূর্তে।