সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্মার্টফোনটা হাতে নেয়ার অভ্যাস আছে অনেকের। এ অভ্যাস সম্পর্কে সতর্ক করে গবেষকরা বলছেন এতে ব্যবহারকারীর সৃজনশীলতা ও সামাজিকতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের মস্তিষ্কে ডেলটা স্টেট বা বিশ্রামের পর্যায়ে থাকে। আর তাই সকালে থিটা নামের স্বপ্নময় অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে আলফা বা সক্রিয় অবস্থায় ফিরে আসি আমরা। তখন আমরা জেগে থাকলেও মস্তিষ্কে সম্পূর্ণভাবে তথ্য প্রক্রিয়াকরণে সক্রিয় হয় না। আর তাই ঘুম থেকে ওঠার পরপরই ফোন ব্যবহার করলে আমাদের মস্তিষ্ক ডেলটা স্টেট থেকে সরাসরি তথ্য প্রক্রিয়াকরণ অবস্থায় চলে আসে। এতে মস্তিষ্কের ওপর চাপ পড়ে। এই দ্রুত পরিবর্তনের ফলে উদ্বেগ তৈরি হওয়ার পাশাপাশি আমাদের চোখে জ্বালাপোড়া হতে পারে। শুধু তা–ই নয়, সারা দিন বিমর্ষ থাকার পাশাপাশি নিজেকে কম উৎপাদনশীলও মনে হতে পারে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা ঘুম ভাঙার ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর স্মার্টফোন ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন।
ফোন ব্যবহারের সময় নীল আলো নিঃসরণ হয়। ফোনের পর্দা থেকে বেরোনো এই নীল আলো চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রায় ৪৬০ ন্যানোমিটার হওয়ায় চোখের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি মানুষের শরীরের স্বাভাবিক ঘুম ও জাগরণ চক্রকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। মানবদেহের এই চক্র ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ নামে পরিচিত। সার্কাডিয়ান ছন্দকে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়িও বলা হয়। এ ঘড়ি বলে দেয় কখন আমাদের ঘুমাতে হবে, কখন জাগতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা, মেলাটোনিন ও কর্টিসলের মতো হরমোন উৎপাদন ও সামগ্রিক সতর্কতাকেও প্রভাবিত করে এই চক্র। নীল আলোর কারণে ঘুমের চক্রের ওপর প্রভাব ফেলে। এতে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়ে।